তারা আমাদের সাথে আছে। আমরাও তাদের সাথে আছি – এ কে আব্দুল মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা (মার্কিন) আমাদের সাথে আছে। আমরাও তাদের সাথে আছি।’ সোমবার (২৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বেশি কিছু চায় না এবং তারা শুধু বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ‘আমরাও চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বরং আমি তাদের বলব, যারা ভোট বানচালের চেষ্টা করছেন তাদের মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আনতে।’

মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই একটি বাস্তববাদী দেশ। এটি বাস্তবতায় বিশ্বাস করে এবং যখন বাস্তব কিছু করা হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেয়। উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, আমেরিকা সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ১৯৭১ সালে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি বাহিনীর পাশে ছিল। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর যখন বাংলাদেশ তার বিজয় দিবস পালন করে, তখন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সমর্থন করে। ‘আমাদের স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আমাদের বিরুদ্ধে যায়নি। এর মানে কী? যেহেতু একটি দেশ গড়ে উঠেছে, আমরা তাদের সাথে আছি।’

মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে চায় না। ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই না।’ তিনি জানান, তাদের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন হতে পারে, তা বিশ্বকে দেখাতে চান তারা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, জনগণের কল্যাণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ গঠনমূলক পরামর্শকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো আমাদের সুপারিশ করে এবং যদি তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করে তবে আমরা সেগুলোকে স্বাগত জানাই।’

সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, এর জন্য প্রয়োজন সবার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা। মোমেন জানান, তারা উন্নত দেশগুলোকে অগ্রাহ্য করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে বিবেচনা করি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি পরাশক্তি। আমরা তাদের অগ্রাহ্য করতে পারি না।’

তিনি বলেন, জনগণ ভোট দিলে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। বাংলাদেশে সাধারণত ৫০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দেন।

মোমেন বলেন, ১৯৯৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের আমলে বাংলাদেশে একটি মাত্র নির্বাচন হয়েছিল, যা ভোটারবিহীন ছিল।

র‌্যাব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, র‌্যাব অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান এবং দুর্নীতিমুক্ত হওয়ায় জনগণ একে সম্মান করে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর সংগঠন। র‌্যাব থাকাতে আমরা সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎপাটন করেছি এবং মাদক ও মানব পাচারও অনেক কমেছে।’

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের দ্বারা প্রশিক্ষিত হওয়ায় তারা খুবই স্মার্ট। ‘তাদের আবার প্রশিক্ষণ দেয়া হলে তারা আরো ভালো করবে।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন সরকার পরিণত এবং আমরা সবসময় আশাবাদী এই এলিট ফোর্সের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন জানান, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা কোনো চাপ অনুভব করছেন না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতি মানে অগ্নিসংযোগ করা নয়, মানুষ হত্যা নয়, দেশের উন্নয়নে বাধা দেয়া এবং অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে বাধাগ্রস্ত করা নয়। রাজনীতি হতে হবে জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে। তাহলে জনগণ তাদের গ্রহণ করবে।’

Source: Naya Diganta

en_GBEnglish